ডার্ক ওয়েব বনাম ডিপ ওয়েব: কী পার্থক্য? ডার্ক ওয়েব ও ডিপ ব্যবহারে সচেতনতা ও নিরাপত্তা

বাড়ির নিরাপত্তার জন্য সেরা স্মার্ট ডিভাইসসমূহঅনলাইনে আমরা প্রতিদিন অসংখ্য ওয়েবসাইট ব্রাউজ করি, তবে ইন্টারনেটের বিশাল অংশ আমাদের দৃষ্টির আড়ালে থাকে। এটি মূলত দুই ভাগে বিভক্ত—ডিপ ওয়েব (Deep Web) এবং ডার্ক ওয়েব (Dark Web)। অনেকেই এই দুটি বিষয়ের মধ্যে বিভ্রান্ত হন, কিন্তু বাস্তবে এগুলো এক নয়। ডিপ ওয়েব হলো সাধারণ ওয়েবসাইটের লুকানো অংশ, যা পাসওয়ার্ড বা অনুমতি ছাড়া দেখা যায় না, আর ডার্ক ওয়েব হলো ইন্টারনেটের এক গোপন জগৎ, যা বিশেষ ব্রাউজার ছাড়া প্রবেশযোগ্য নয়।

ডিপ ওয়েব (Deep Web) কী?

ডিপ ওয়েব (Deep Web) কী?

ডিপ ওয়েব হলো ইন্টারনেটের সেই অংশ, যা সাধারণ সার্চ ইঞ্জিনে (যেমন: Google, Bing, Yahoo) খুঁজে পাওয়া যায় না। এটি মূলত ব্যক্তিগত, পাসওয়ার্ড-সুরক্ষিত, এবং সংরক্ষিত ডেটার জন্য ব্যবহৃত হয়।

ডিপ ওয়েবের বৈশিষ্ট্য

• সাধারণ ব্রাউজারে প্রবেশযোগ্য: Google Chrome, Firefox বা অন্যান্য সাধারণ ব্রাউজার দিয়ে ডিপ ওয়েবের কনটেন্ট অ্যাক্সেস করা যায়, তবে লগইন বা অনুমতি প্রয়োজন হয়।
• ব্যক্তিগত ও সংবেদনশীল তথ্য সংরক্ষণ: এখানে ব্যাংকিং তথ্য, ইমেইল, সাবস্ক্রিপশন ভিত্তিক কনটেন্ট, মেডিকেল রেকর্ড, গবেষণা পত্র ইত্যাদি সংরক্ষিত থাকে।
• আইনসিদ্ধ এবং নিরাপদ: ডিপ ওয়েবের বেশিরভাগ অংশ বৈধ এবং নিরাপদ, যা শুধুমাত্র অনুমোদিত ব্যবহারকারীদের জন্য উন্মুক্ত।

ডিপ ওয়েবের কিছু উদাহরণ

1. ইমেইল অ্যাকাউন্ট: Gmail, Yahoo Mail-এর ইনবক্স, যা শুধু লগইন করলে দেখা যায়।
2. ব্যাংকিং সিস্টেম: অনলাইন ব্যাংকিং পোর্টালে থাকা তথ্য, যা শুধুমাত্র গ্রাহকরা অ্যাক্সেস করতে পারেন।
3. বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা ডেটাবেজ: বিভিন্ন গবেষণা পত্র ও একাডেমিক তথ্য, যা পাবলিক সার্চে আসে না।
4. সাবস্ক্রিপশন ভিত্তিক কনটেন্ট: Netflix, Amazon Prime-এর মতো সাইটের পেইড কনটেন্ট।
5. ক্লাউড স্টোরেজ: Google Drive, Dropbox-এর ব্যক্তিগত ফাইল, যা অনুমতি ছাড়া দেখা যায় না।

ডিপ ওয়েব কি বিপজ্জনক?

না, ডিপ ওয়েব সাধারণত বিপজ্জনক নয়। এটি আমাদের ব্যক্তিগত তথ্য এবং সংবেদনশীল ডেটা নিরাপদভাবে সংরক্ষণ করার জন্য ব্যবহৃত হয়। তবে, যদি কেউ হ্যাকিং বা তথ্য চুরির মাধ্যমে এখানে প্রবেশের চেষ্টা করে, তাহলে তা অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে।

সংক্ষেপে বলা যায়, ডিপ ওয়েব হলো ইন্টারনেটের নিরাপদ ও লুকানো অংশ, যেখানে ব্যক্তিগত তথ্য সংরক্ষিত থাকে এবং যা সার্চ ইঞ্জিনে সরাসরি দেখা যায় না।

আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশে আসতে পারে এমন ৫টি ভবিষ্যৎ প্রযুক্তি

ডার্ক ওয়েব (Dark Web) কী?

ডার্ক ওয়েব (Dark Web) কী?

ডার্ক ওয়েব হলো ইন্টারনেটের একটি গোপন অংশ, যা সাধারণ ব্রাউজারে (যেমন: Google Chrome, Firefox) প্রবেশযোগ্য নয় এবং শুধুমাত্র বিশেষ সফটওয়্যার (যেমন: Tor Browser, I2P) ব্যবহার করে অ্যাক্সেস করা যায়। এটি ডিপ ওয়েবেরই একটি সাবসেট, তবে এখানে গোপনীয়তা এবং বেনামে থাকার সুযোগ বেশি থাকে।

ডার্ক ওয়েবের বৈশিষ্ট্য

• সাধারণ সার্চ ইঞ্জিনে পাওয়া যায় না: Google বা Bing-এর মাধ্যমে ডার্ক ওয়েবের কনটেন্ট দেখা যায় না।
• বিশেষ ব্রাউজার প্রয়োজন: Tor (The Onion Router), I2P-এর মতো এনক্রিপ্টেড ব্রাউজার ব্যবহার করে ডার্ক ওয়েব অ্যাক্সেস করতে হয়।
• গোপনীয়তা ও অজ্ঞাত পরিচয়ের সুবিধা: ব্যবহারকারীরা তাদের আইপি ঠিকানা গোপন রাখতে পারেন, যা কখনও কখনও অপরাধমূলক কার্যক্রমের জন্য ব্যবহার করা হয়।
• আইনসিদ্ধ এবং অবৈধ উভয় ধরনের কনটেন্ট: ডার্ক ওয়েবের কিছু অংশ বৈধ, যেমন নির্যাতিত সাংবাদিকদের জন্য নিরাপদ যোগাযোগের প্ল্যাটফর্ম। তবে অনেক ক্ষেত্রে এটি অবৈধ কর্মকাণ্ডের জন্য ব্যবহৃত হয়।

ডার্ক ওয়েবের কিছু উদাহরণ

1. গোপন মার্কেটপ্লেস: অবৈধ মাদক, অস্ত্র, চুরি হওয়া তথ্য, জাল ডকুমেন্ট বিক্রি হয় (যেমন: Silk Road, যা ২০১৩ সালে বন্ধ করা হয়)।
2. হ্যাকিং ফোরাম: যেখানে ডেটা ব্রিচ, সাইবার আক্রমণ ও হ্যাকিং টুলস নিয়ে আলোচনা করা হয়।
3. অজ্ঞাত ফোরাম ও ব্লগ: যেখানে ব্যবহারকারীরা পরিচয় গোপন রেখে স্বাধীনভাবে মতামত প্রকাশ করতে পারেন।
4. গোপন সংবাদ সংরক্ষণাগার: যেখানে সাংবাদিক বা ভিন্নমতাবলম্বীরা সেন্সরশিপ এড়িয়ে নিরাপদে তথ্য শেয়ার করতে পারেন।
5. বেআইনি পরিষেবা: যেমন পাসপোর্ট জালিয়াতি, অর্থ পাচার, ভুয়া পরিচয়পত্র বিক্রি ইত্যাদি।

ডার্ক ওয়েব কি বিপজ্জনক?

হ্যাঁ, ডার্ক ওয়েব বিপজ্জনক হতে পারে। এখানে ফিশিং, স্ক্যাম, হ্যাকিং, ডাটা ব্রিচ, অবৈধ পণ্য কেনাবেচা, মানব পাচার, এবং সাইবার ক্রাইমের মতো ঝুঁকিপূর্ণ কার্যক্রম ঘটে। অনেক ব্যবহারকারী না বুঝে এখানে প্রবেশ করলে হ্যাকিং বা আইনি জটিলতায় পড়তে পারেন।

সংক্ষেপে, ডার্ক ওয়েব হলো ইন্টারনেটের একটি গোপন অংশ, যা শুধুমাত্র বিশেষ সফটওয়্যার দিয়ে অ্যাক্সেস করা যায় এবং যেখানে বৈধ ও অবৈধ উভয় ধরনের কার্যক্রম ঘটে। সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য এটি ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।

ডিপ ওয়েব বনাম ডার্ক ওয়েব: মূল পার্থক্য

অনেকেই ডিপ ওয়েব এবং ডার্ক ওয়েবকে একই জিনিস মনে করেন, কিন্তু বাস্তবে এদের মধ্যে বড় পার্থক্য রয়েছে। নিচে মূল পার্থক্যগুলো তুলে ধরা হলো—

ডিপ ওয়েব (Deep Web)

1. সংজ্ঞা: ইন্টারনেটের সেই অংশ, যা সার্চ ইঞ্জিনে ইনডেক্স করা থাকে না এবং অনুমতি ছাড়া প্রবেশযোগ্য নয়।
2. অ্যাক্সেসের উপায়: সাধারণ ব্রাউজার (Google Chrome, Firefox) দিয়ে লগইন বা অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করা যায়।
3. কী ধরনের কনটেন্ট থাকে?: ইমেইল, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, সাবস্ক্রিপশন ভিত্তিক ওয়েবসাইট, গবেষণা পত্র, ক্লাউড স্টোরেজ ইত্যাদি।
4. আইনি অবস্থান: পুরোপুরি বৈধ এবং নিরাপদ।
5. ঝুঁকিপূর্ণ কি না?: সাধারণত নিরাপদ, কারণ এখানে অনুমতি ছাড়া কেউ প্রবেশ করতে পারে না।
6. সার্চ ইঞ্জিনে দেখা যায়?: না, তবে অনুমতি থাকলে অ্যাক্সেস করা যায়।
7. ব্যবহারকারীদের উদ্দেশ্য: ব্যক্তিগত, কর্পোরেট বা গবেষণামূলক তথ্য সংরক্ষণ।

ডার্ক ওয়েব (Dark Web)

1. সংজ্ঞা: ইন্টারনেটের একটি গোপন অংশ, যা শুধুমাত্র বিশেষ ব্রাউজার (Tor, I2P) ব্যবহার করে প্রবেশ করা যায়।
2. অ্যাক্সেসের উপায়: Tor বা I2P ব্রাউজার ছাড়া প্রবেশ করা সম্ভব নয়।
3. কী ধরনের কনটেন্ট থাকে?: গোপন মার্কেটপ্লেস, হ্যাকিং ফোরাম, অবৈধ পণ্য ও পরিষেবা, এনক্রিপ্টেড যোগাযোগ ইত্যাদি।
4. আইনি অবস্থান: কিছু অংশ বৈধ, তবে অনেক ক্ষেত্রে অবৈধ কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
5. ঝুঁকিপূর্ণ কি না?: ঝুঁকিপূর্ণ, কারণ এখানে সাইবার ক্রাইম, স্ক্যাম, ডাটা ব্রিচ, এবং অন্যান্য বেআইনি কার্যক্রম ঘটে।
6. সার্চ ইঞ্জিনে দেখা যায়?: না, সার্চ ইঞ্জিনে এটি ইনডেক্স হয় না এবং সাধারণভাবে প্রবেশ করা সম্ভব নয়।
7. ব্যবহারকারীদের উদ্দেশ্য: বেনামে যোগাযোগ, অবৈধ লেনদেন, সেন্সরশিপ এড়িয়ে তথ্য বিনিময়।

সারসংক্ষেপ

• ডিপ ওয়েব হলো ইন্টারনেটের একটি লুকানো অংশ, যেখানে ব্যক্তিগত ও সংবেদনশীল তথ্য থাকে এবং এটি সাধারণত নিরাপদ।
• ডার্ক ওয়েব হলো ইন্টারনেটের একটি গোপন ও এনক্রিপ্টেড অংশ, যা ভালো ও খারাপ দুই ধরনের উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হতে পারে, তবে এটি ঝুঁকিপূর্ণ।

ডিপ ওয়েব ও ডার্ক ওয়েব সম্পর্কে সচেতনতা থাকা প্রয়োজন, যাতে আমরা ইন্টারনেটকে নিরাপদভাবে ব্যবহার করতে পারি।

আরো পড়ুনঃ AI (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) আমাদের জীবনকে কীভাবে বদলে দিচ্ছে?

ডিপ ওয়েব কি বিপজ্জনক?

না, ডিপ ওয়েব সাধারণত বিপজ্জনক নয়। এটি ইন্টারনেটের সেই অংশ, যেখানে ব্যক্তিগত ও সংবেদনশীল তথ্য সংরক্ষিত থাকে এবং অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করা সম্ভব নয়। তবে কিছু নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে এটি ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।

কেন ডিপ ওয়েব নিরাপদ?

1. সুরক্ষিত অ্যাক্সেস: ডিপ ওয়েবের তথ্য সাধারণত পাসওয়ার্ড, এনক্রিপশন বা অনুমোদিত অ্যাক্সেসের মাধ্যমে সুরক্ষিত থাকে।
2. আইনসিদ্ধ ব্যবহার: এখানে ব্যাংকিং তথ্য, ইমেইল, গবেষণা পত্র, ক্লাউড স্টোরেজ ইত্যাদি রাখা হয়, যা সম্পূর্ণ বৈধ।
3. সাধারণ ব্রাউজার দিয়ে প্রবেশযোগ্য: Google Chrome, Firefox-এর মতো ব্রাউজার দিয়ে লগইন করলেই ডিপ ওয়েবের কনটেন্ট দেখা যায়।

কখন ডিপ ওয়েব বিপজ্জনক হতে পারে?

1. ফিশিং ও হ্যাকিং আক্রমণ: যদি কোনো ব্যবহারকারী ভুলবশত ফিশিং লিঙ্কে ক্লিক করেন, তবে তার ব্যক্তিগত তথ্য চুরি হতে পারে।
2. ডাটা লিকের ঝুঁকি: যদি নিরাপত্তা দুর্বল হয়, তাহলে সংরক্ষিত তথ্য হ্যাকিংয়ের শিকার হতে পারে।
3. ভুয়া ওয়েবসাইট: কিছু স্ক্যাম সাইট ব্যবহারকারীদের প্রতারণার ফাঁদে ফেলতে পারে।

কীভাবে নিরাপদ থাকা যায়?

• শুধুমাত্র বিশ্বস্ত ওয়েবসাইটে লগইন করুন।
• শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ও দুই স্তরের নিরাপত্তা (2FA) ব্যবহার করুন।
• সন্দেহজনক লিঙ্কে ক্লিক করা এড়িয়ে চলুন।

সারসংক্ষেপ

ডিপ ওয়েব নিজে থেকে বিপজ্জনক নয়, বরং এটি আমাদের তথ্য সুরক্ষিত রাখার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। তবে অসাবধানতা বা সাইবার আক্রমণের কারণে এটি ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তাই নিরাপত্তা ব্যবস্থা মেনে চললে ডিপ ওয়েব ব্যবহার করা একদম নিরাপদ।

ডার্ক ওয়েব কি বিপজ্জনক?

হ্যাঁ, ডার্ক ওয়েব বিপজ্জনক হতে পারে। এটি ইন্টারনেটের একটি গোপন অংশ, যেখানে ব্যবহারকারীরা বেনামে থাকতে পারেন এবং আইনবিরুদ্ধ অনেক কার্যক্রম পরিচালিত হয়। যদিও এটি কিছু ক্ষেত্রে বৈধ উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়, তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটি অবৈধ ও ঝুঁকিপূর্ণ কার্যক্রমের কেন্দ্রস্থল।

কেন ডার্ক ওয়েব বিপজ্জনক?

অপরাধমূলক কার্যক্রম:

• মাদক, অস্ত্র, ভুয়া ডকুমেন্ট, চুরি হওয়া ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও ক্রেডিট কার্ড তথ্য কেনাবেচা হয়।
• হ্যাকিং পরিষেবা, পাসওয়ার্ড বিক্রি, ডেটা ব্রিচ সংক্রান্ত তথ্য পাওয়া যায়।
• মানব পাচার ও অবৈধ লেনদেনের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

সাইবার নিরাপত্তার ঝুঁকি:

• স্ক্যাম ও ফিশিং লিঙ্কের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি হতে পারে।
• হ্যাকিং, ভাইরাস বা ম্যালওয়্যার সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে।

আইনি সমস্যা:

• অনেক দেশে ডার্ক ওয়েব ব্রাউজ করাও সন্দেহজনক হিসেবে ধরা হয়।
• ভুলবশত কোনো অবৈধ সাইটে প্রবেশ করলেও আইনি ঝামেলায় পড়তে পারেন।

চোখে না পড়া বিপদ:

• এখানে থাকা তথ্য যাচাই করা কঠিন, তাই সহজেই প্রতারণার শিকার হওয়া সম্ভব।
• অনেক সাইট ব্যবহারকারীদের গোপন তথ্য সংরক্ষণ করে ব্ল্যাকমেইল করতে পারে।

ডার্ক ওয়েব কখন নিরাপদ হতে পারে?

• নির্যাতিত সাংবাদিক, রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বী, বা সেন্সরশিপ এড়িয়ে তথ্য আদান-প্রদানের জন্য এটি ব্যবহার করা যেতে পারে।
• কিছু সংস্থা এনক্রিপ্টেড যোগাযোগের জন্য এটি ব্যবহার করে।

কীভাবে নিরাপদ থাকা যায়?

• ডার্ক ওয়েব এড়িয়ে চলাই ভালো।
• ভুলবশত কোনো লিঙ্কে ক্লিক না করা ও সন্দেহজনক ফাইল ডাউনলোড না করা।
• ব্যক্তিগত তথ্য কখনোই শেয়ার না করা।

সারসংক্ষেপ

ডার্ক ওয়েবের বেশিরভাগ অংশই অপরাধমূলক কাজের জন্য ব্যবহৃত হয়, যা সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক। যদি কেউ না বুঝে এখানে প্রবেশ করেন, তাহলে হ্যাকিং, প্রতারণা, বা আইনি সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। তাই ডার্ক ওয়েব ব্রাউজ করা এড়িয়ে চলাই সবচেয়ে নিরাপদ পদ্ধতি।

সচেতনতা ও নিরাপত্তা

ইন্টারনেট ব্যবহার করার সময় আমাদের সচেতনতা ও নিরাপত্তার বিষয়ে সতর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি, বিশেষ করে যখন কথা আসে ডিপ ওয়েব ও ডার্ক ওয়েব নিয়ে। যদিও ডিপ ওয়েব মূলত নিরাপদ, তবুও সাইবার হুমকি থেকে বাঁচতে কিছু সতর্কতা নেওয়া প্রয়োজন। অপরদিকে, ডার্ক ওয়েব বিপজ্জনক হতে পারে, তাই সেখানে প্রবেশ করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।

ডিপ ওয়েব ব্যবহারে নিরাপত্তা বজায় রাখার উপায়:

1. শুধুমাত্র বিশ্বস্ত ওয়েবসাইট ব্যবহার করুন – ব্যাংক, ইমেইল, ও অফিসিয়াল ডাটাবেসের মতো নিরাপদ প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করুন।
2. দুই স্তরের নিরাপত্তা (2FA) চালু করুন – আপনার অ্যাকাউন্ট রক্ষা করতে টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন (2FA) চালু করুন।
3. শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন – সহজ অনুমানযোগ্য পাসওয়ার্ডের পরিবর্তে জটিল ও ইউনিক পাসওয়ার্ড রাখুন।
4. সন্দেহজনক লিঙ্ক এড়িয়ে চলুন – ফিশিং লিঙ্ক বা সন্দেহজনক ওয়েবসাইটে ক্লিক করা থেকে বিরত থাকুন।
5. VPN ও এনক্রিপশন ব্যবহার করুন – ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত রাখতে VPN (Virtual Private Network) ব্যবহার করুন।

ডার্ক ওয়েব থেকে দূরে থাকার কারণ ও সতর্কতা:

1. আইনি জটিলতা: অনেক দেশে ডার্ক ওয়েব ব্রাউজ করাও সন্দেহজনক বা বেআইনি হতে পারে।
2. প্রতারণা ও সাইবার ক্রাইম: এখানে হ্যাকিং, তথ্য চুরি, ব্ল্যাকমেইল ও স্ক্যামিং হয়ে থাকে।
3. ভাইরাস ও ম্যালওয়্যার: ডার্ক ওয়েবের অনেক ওয়েবসাইটে বিপজ্জনক ম্যালওয়্যার থাকতে পারে, যা আপনার ডিভাইস ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
4. বেনামে থাকলেও হ্যাকিংয়ের শিকার হওয়ার ঝুঁকি: Tor বা অন্য ব্রাউজার ব্যবহার করলেও হ্যাকিংয়ের শিকার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য করণীয়:

• অজানা ওয়েবসাইট ব্রাউজ করার আগে বিশ্বস্ততা যাচাই করুন।
• নিয়মিত অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার আপডেট করুন।
• ডার্ক ওয়েব সম্পর্কে কৌতূহল থাকা স্বাভাবিক, তবে এটি এড়িয়ে চলাই সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত।

সচেতন থাকুন, নিরাপদ থাকুন এবং ইন্টারনেটকে সঠিকভাবে ব্যবহার করুন!

শেষকথাঃ উপসংহার

ডিপ ওয়েব এবং ডার্ক ওয়েব একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কিত হলেও তাদের মধ্যে বড় পার্থক্য রয়েছে। ডিপ ওয়েব হলো ইন্টারনেটের সেই অংশ, যা সাধারণ সার্চ ইঞ্জিনে ইনডেক্স করা থাকে না এবং অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করা যায় না। এটি মূলত ব্যক্তিগত, গবেষণামূলক ও সংবেদনশীল তথ্য সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয়। অন্যদিকে, ডার্ক ওয়েব হলো ডিপ ওয়েবের একটি ছোট অংশ, যেখানে শুধুমাত্র বিশেষ ব্রাউজার (যেমন Tor) ব্যবহার করে প্রবেশ করা যায় এবং এখানে অনেক বেআইনি কার্যক্রম ঘটে।

যদি নিরাপত্তার কথা বলা হয়, ডিপ ওয়েব সাধারণত নিরাপদ, কারণ এটি আমাদের ব্যক্তিগত ও সংরক্ষিত তথ্য রক্ষা করে। তবে ডার্ক ওয়েব ঝুঁকিপূর্ণ, কারণ এখানে অপরাধমূলক কার্যক্রম পরিচালিত হয় এবং ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস বা প্রতারণার শিকার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

ডিপ ওয়েব ও ডার্ক ওয়েব সম্পর্কে সচেতনতা থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যাতে আমরা ইন্টারনেটকে নিরাপদ ও দায়িত্বশীলভাবে ব্যবহার করতে পারি।