সস্তায় বিদেশ ভ্রমণ করার উপায়। বাজেট-বান্ধব ভ্রমণের ১০টি টিপস

Sabbir Space💲

26 Jan, 2025

বিদেশ ভ্রমণ মানেই অনেকের কাছে ব্যয়বহুল একটি স্বপ্ন। তবে সঠিক পরিকল্পনা, সময়জ্ঞান এবং কিছু সহজ কৌশল ব্যবহার করে আপনি খুব সহজেই কম খরচে বিদেশ ভ্রমণের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন। বর্তমান সময়ে অনেক এয়ারলাইনস, হোস্টেল, এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্ম সাশ্রয়ী মূল্যে ভ্রমণের সুযোগ দিচ্ছে, যা আপনাকে বাজেটের মধ্যে থেকেই ভ্রমণের স্বপ্ন পূরণ করতে সাহায্য করবে।

সস্তায় বিদেশ ভ্রমণ করার উপায়। বাজেট-বান্ধব ভ্রমণের ১০টি টিপস

সস্তায় বিদেশ ভ্রমণ করতে চাইলে এই নিবন্ধটি আপনার জন্যই। এখানে শেয়ার করা হয়েছে এমন কিছু কার্যকর উপায়, যা আপনাকে কম খরচে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করতে সহায়তা করবে।

ভ্রমণের সঠিক সময় বেছে নিন

সস্তায় বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে ভ্রমণের সময় নির্ধারণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নির্দিষ্ট সময়ে ভ্রমণের পরিকল্পনা করলে আপনি অনেক খরচ সাশ্রয় করতে পারবেন।

অফ-পিক সিজনে ভ্রমণ করুনঃ পর্যটকদের ভিড় কম থাকায় এ সময় ফ্লাইট টিকিট, হোটেল ভাড়া, এবং অন্যান্য খরচ অনেক কমে যায়। সাধারণত স্কুল ছুটির মৌসুম বা বড় উৎসবের আগে-পরে অফ-পিক সিজন ধরা হয়।
উৎসব ও ছুটির সময় এড়িয়ে চলুনঃ বড়দিন, নববর্ষ, ঈদ বা অন্য যেকোনো আন্তর্জাতিক উৎসবের সময় ফ্লাইট এবং হোটেলের খরচ দ্বিগুণ বা তিনগুণ বেড়ে যায়। এ সময় ভ্রমণের পরিকল্পনা থেকে বিরত থাকুন।
সপ্তাহের মাঝামাঝি দিন বেছে নিনঃ ফ্লাইট বুকিং বা হোটেল ভাড়ার ক্ষেত্রে সোমবার থেকে বৃহস্পতিবারের মধ্যে দিনগুলো তুলনামূলক সস্তা হয়।
ভ্রমণের আগে আগে টিকিট বুকিং এড়িয়ে চলুনঃ শেষ মুহূর্তে টিকিট বুকিংয়ের খরচ বেশি পড়ে। তাই ভ্রমণের কয়েক মাস আগে থেকে পরিকল্পনা করে টিকিট বুক করে ফেলুন।
আবহাওয়ার বিবেচনা করুনঃ যেসব দেশে শীত বা বর্ষার মৌসুমে পর্যটকদের সংখ্যা কম থাকে, সে সময় ভ্রমণের জন্য বেছে নিন। এতে খরচ যেমন কমবে, তেমনি ভিড় এড়ানোও সম্ভব হবে।

সঠিক সময় নির্বাচন করলে আপনি কম খরচে আরামদায়ক ও স্মরণীয় ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নিতে পারবেন।

সাশ্রয়ী এয়ারলাইনস ব্যবহার করুন

বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে ফ্লাইটের টিকিট খরচ একটি বড় অংশ দখল করে। তবে সাশ্রয়ী এয়ারলাইনস ব্যবহার করলে আপনি সহজেই ভ্রমণ খরচ কমিয়ে ফেলতে পারেন। নিচে কিছু কার্যকর পরামর্শ দেওয়া হলো:

লো-কস্ট এয়ারলাইনস বেছে নিনঃ বিশ্বজুড়ে অনেক সাশ্রয়ী এয়ারলাইনস রয়েছে, যারা কম খরচে টিকিট প্রদান করে। উদাহরণস্বরূপ: এয়ার এশিয়া: এশিয়ার বিভিন্ন গন্তব্যে সাশ্রয়ী টিকিট। রায়ানএয়ার: ইউরোপে ভ্রমণের জন্য অন্যতম সাশ্রয়ী এয়ারলাইনস। স্পাইসজেট ও ইন্ডিগো: দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সাশ্রয়ী ফ্লাইটের জন্য জনপ্রিয়।
প্রোমোশন এবং ডিসকাউন্ট অনুসন্ধান করুনঃ বিভিন্ন এয়ারলাইনস বিশেষ প্রোমোশনাল অফার দিয়ে থাকে। এগুলো সময়মতো অনুসন্ধান করুন। স্কাইস্ক্যানার বা মোমন্ডো-এর মতো ওয়েবসাইট ব্যবহার করে সস্তা ফ্লাইট খুঁজে নিন।
লেআভার ফ্লাইট বেছে নিনঃ সরাসরি ফ্লাইটের চেয়ে লেআভার ফ্লাইটের খরচ কম হয়। যদিও সময় একটু বেশি লাগে, তবে এটি বাজেট কমাতে কার্যকর।
ফ্লেক্সিবল তারিখ এবং সময় বেছে নিনঃ রাতে বা সকাল খুব ভোরে ফ্লাইটের টিকিট তুলনামূলক কম দামে পাওয়া যায়। নির্দিষ্ট তারিখের পরিবর্তে যদি তারিখের ব্যাপারে ফ্লেক্সিবল থাকেন, তাহলে সাশ্রয়ী ফ্লাইট খুঁজে পাওয়া সহজ হয়।
লো-কস্ট এয়ারলাইনসের শর্ত মেনে চলুনঃ লো-কস্ট এয়ারলাইনস সাধারণত বিনামূল্যে খাবার সরবরাহ করে না। তাই আগে থেকেই খাবার সঙ্গে রাখতে পারেন। অতিরিক্ত লাগেজ বহনের জন্য বাড়তি খরচ এড়াতে লাগেজ সীমার মধ্যে থাকার চেষ্টা করুন।

সাশ্রয়ী এয়ারলাইনস ব্যবহার করলে ভ্রমণের খরচ অনেকটাই কমে যায়। এই কৌশলগুলো মেনে চললে আপনি সহজেই বাজেটের মধ্যে বিদেশ ভ্রমণের স্বপ্ন পূরণ করতে পারবেন।

বাজেট হোটেল বা হোস্টেল বেছে নিন

সস্তায় বিদেশ ভ্রমণের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো থাকার খরচ কমানো। সঠিক পরিকল্পনা এবং কৌশল প্রয়োগের মাধ্যমে আপনি সহজেই কম খরচে ভালো মানের থাকার জায়গা খুঁজে পেতে পারেন।

হোস্টেল বা ডরমেটরি ব্যবহার করুনঃ বেশিরভাগ বড় শহরে হোস্টেল বা ডরমেটরি সাশ্রয়ী মূল্যে থাকার সুযোগ দেয়। ওয়েবসাইট ব্যবহার করুন: হোস্টেল খুঁজতে Hostelworld, Booking.com, বা Agoda ব্যবহার করুন। ডরমেটরি রুম: একক রুমের পরিবর্তে শেয়ারড ডরমেটরি ব্যবহার করলে খরচ কমে যায়।
এয়ারবিএনবি (Airbnb) বেছে নিনঃ স্থানীয়দের বাসায় থাকার জন্য এয়ারবিএনবি একটি দারুণ বিকল্প।এখানে আপনি পুরো অ্যাপার্টমেন্ট বা একটি রুম ভাড়া নিতে পারেন, যা হোটেলের চেয়ে সস্তা হয়।নিজের রান্নার ব্যবস্থা থাকলে খাবারের খরচও কমবে।
কম বাজেটের হোটেল খুঁজুনঃ বাজেট হোটেল চেইন: যেমন OYO Rooms, RedDoorz, বা Treebo Hotels। প্রোমোশনাল অফার এবং ডিসকাউন্ট খুঁজতে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে নজর রাখুন।
হোমস্টে বা গেস্টহাউস ব্যবহার করুনঃ স্থানীয়দের বাড়িতে থাকার জন্য Homestay.com বা স্থানীয় গেস্টহাউস খুঁজে নিন। এটি কেবল সাশ্রয়ী নয়, স্থানীয় সংস্কৃতি জানারও সুযোগ করে দেয়।
হোটেল অ্যাগ্রিগেটর সাইট ব্যবহার করুনঃ Trivago, Expedia, বা Kayak এর মতো সাইট ব্যবহার করে বিভিন্ন হোটেলের দাম তুলনা করুন। আগাম বুকিং করলে আকর্ষণীয় ছাড় পেতে পারেন।
ফ্রি থাকার সুযোগ কাজে লাগানঃ Couchsurfing এর মাধ্যমে বিনামূল্যে থাকার ব্যবস্থা করতে পারেন। এটি কেবল খরচ বাঁচায় না, স্থানীয় মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব করারও সুযোগ দেয়।
লোকেশন বিবেচনা করুনঃ শহরের কেন্দ্র থেকে দূরে থাকলে হোটেলের খরচ কম হয়। তবে, যানবাহনের সহজলভ্যতা এবং নিরাপত্তা যাচাই করে নিন।

বাজেট হোটেল বা হোস্টেল বেছে নিলে আপনি কম খরচে আরামদায়কভাবে থাকতে পারবেন। সঠিক জায়গা নির্বাচন এবং সময়মতো বুকিং নিশ্চিত করলে ভ্রমণ অভিজ্ঞতা আরও সুন্দর হবে।

স্থানীয় খাবার খান

বিদেশ ভ্রমণের সময় খাবার খরচ কমাতে এবং স্থানীয় সংস্কৃতির স্বাদ পেতে স্থানীয় খাবার খাওয়া সবচেয়ে কার্যকর একটি উপায়। এতে কেবল অর্থ সাশ্রয়ই হবে না, বরং ভ্রমণ অভিজ্ঞতাও হবে আরও আকর্ষণীয়।

রাস্তায় বিক্রি হওয়া খাবার ট্রাই করুনঃ স্থানীয় স্ট্রিট ফুড টেস্ট করুন। এটি সাধারণত রেস্তোরাঁর খাবারের চেয়ে সস্তা এবং ভিন্ন ধরনের স্বাদে ভরপুর। উদাহরণস্বরূপ, থাইল্যান্ডের প্যাড থাই বা ইন্ডোনেশিয়ার নাসি গোরেং স্ট্রিট ফুড হিসেবে জনপ্রিয়।
স্থানীয় রেস্তোরাঁ বেছে নিনঃ আন্তর্জাতিক চেইন রেস্তোরাঁর পরিবর্তে স্থানীয় ছোট রেস্তোরাঁ বা "ওয়ারুং" (গ্রামীণ রেস্তোরাঁ) বেছে নিন। এগুলোতে খাবারের দাম কম হয় এবং স্থানীয় স্বাদ উপভোগ করা যায়।
মার্কেট থেকে খাবার কিনুনঃ স্থানীয় বাজার থেকে তাজা ফলমূল, সবজি, বা স্ন্যাকস কিনুন। এটি খাবারের খরচ কমাবে এবং আপনাকে স্থানীয় খাবারের প্রতি অন্তর্দৃষ্টি দেবে।
নিজে রান্না করুনঃ এয়ারবিএনবি বা হোস্টেলে থাকলে রান্নার সুযোগ নিন। স্থানীয় বাজার থেকে সামগ্রী কিনে নিজের খাবার তৈরি করলে খরচ অনেকটাই কমে যায়।
মেনু আগে দেখে নিনঃ বড় রেস্তোরাঁ বা টুরিস্ট স্পটের রেস্তোরাঁয় সাধারণত দাম বেশি থাকে। খাবার অর্ডারের আগে মেনু দেখে দাম যাচাই করুন।
লোকালদের কাছ থেকে সুপারিশ নিনঃ স্থানীয় মানুষের কাছে তাদের পছন্দের সাশ্রয়ী এবং ভালো মানের খাবারের জায়গা সম্পর্কে জানতে চান। এ ধরনের রেস্তোরাঁয় খাবারের মান ভালো এবং দামও সাশ্রয়ী।
অতিরিক্ত খাবার অপচয় করবেন নাঃ ছোট অংশে অর্ডার করুন। খাবার শেষ না হলে অপচয় হয় এবং আপনার বাজেটও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

স্থানীয় খাবার খাওয়ার মাধ্যমে আপনি অর্থ সাশ্রয় করতে পারবেন এবং ভ্রমণের অভিজ্ঞতাও আরও সমৃদ্ধ হবে। এটি কেবল সাশ্রয়ী নয়, বরং প্রতিটি জায়গার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের একটি বিশেষ অংশের স্বাদ গ্রহণ করার সুযোগ।

স্থানীয় পরিবহন ব্যবহার করুন

বিদেশ ভ্রমণে খরচ কমানোর সবচেয়ে কার্যকর উপায়গুলোর মধ্যে একটি হলো স্থানীয় পরিবহন ব্যবহার করা। এতে আপনি শুধুমাত্র খরচ বাঁচাতে পারবেন না, বরং স্থানীয় সংস্কৃতি এবং জীবনযাত্রার সাথে আরও ঘনিষ্ঠভাবে পরিচিত হতে পারবেন।

পাবলিক বাস এবং ট্রেন ব্যবহার করুনঃ অধিকাংশ দেশে পাবলিক বাস এবং ট্রেন সবচেয়ে সাশ্রয়ী পরিবহন মাধ্যম। উদাহরণস্বরূপ, ইউরোপে ইউরোরেল পাস ব্যবহার করে আপনি একাধিক দেশে ভ্রমণ করতে পারবেন। এশিয়ার অনেক দেশে স্থানীয় বাস বা লোকাল ট্রেন ভ্রমণের জন্য জনপ্রিয় এবং সাশ্রয়ী।
মেট্রো ও সাবওয়ে সিস্টেম বেছে নিনঃ বড় শহরগুলোতে মেট্রো বা সাবওয়ে ভ্রমণ দ্রুত এবং সস্তা। যেমন: সিঙ্গাপুর, টোকিও বা দুবাইয়ের মেট্রো সিস্টেম সহজলভ্য এবং বাজেট-ফ্রেন্ডলি।
সাইকেল ভাড়া নিনঃ অনেক শহরে সাইকেল ভাড়া দেওয়া হয় যা পরিবেশবান্ধব এবং খরচ বাঁচানোর উপায়। উদাহরণস্বরূপ, নেদারল্যান্ডস বা ডেনমার্কে সাইকেল চালিয়ে শহর ঘুরতে পারবেন।
লোকাল টুকটুক বা রিকশা ব্যবহার করুনঃ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে রিকশা বা টুকটুক একটি জনপ্রিয় এবং সাশ্রয়ী পরিবহন মাধ্যম। দামাদামি করতে শিখলে এ খরচ আরও কমানো সম্ভব।
শেয়ারড রাইড বেছে নিনঃ উবার পুল, লিফট শেয়ার, বা স্থানীয় শেয়ারড রাইড অপশন ব্যবহার করলে খরচ অনেকটা কমে যায়। এটি একাধিক ব্যক্তির সাথে রাইড শেয়ার করার মাধ্যমে ব্যয় সাশ্রয়ের সুযোগ দেয়।
পায়ে হাঁটা বা স্কুটার ব্যবহার করুনঃ যদি দূরত্ব কম হয়, তাহলে পায়ে হাঁটা বা ইলেকট্রিক স্কুটার ব্যবহার করুন। অনেক শহরে ই-স্কুটার ভাড়া দেওয়া হয় যা পরিবেশবান্ধব এবং সাশ্রয়ী।
লোকাল ট্রাভেল কার্ড কিনুনঃ অনেক শহরে দিন, সপ্তাহ বা মাসব্যাপী পাবলিক ট্রান্সপোর্ট কার্ড পাওয়া যায়। যেমন: লন্ডনের ওয়েস্টার কার্ড, হংকংয়ের অক্টোপাস কার্ড, এবং সিঙ্গাপুরের ইজিলিংক কার্ড।

স্থানীয় পরিবহন ব্যবহারের মাধ্যমে ভ্রমণ খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব। এটি শুধুমাত্র আপনার বাজেট সাশ্রয় করবে না, বরং আপনাকে স্থানীয় মানুষের সাথে মেশার সুযোগ দেবে এবং স্থানীয় সংস্কৃতি অনুভব করার সুযোগ তৈরি করবে।

ট্রাভেল এজেন্টের পরিবর্তে নিজেই পরিকল্পনা করুন

বিদেশ ভ্রমণে খরচ কমানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় হলো ট্রাভেল এজেন্টের উপর নির্ভর না করে নিজেই পুরো ভ্রমণ পরিকল্পনা করা। এতে আপনার অর্থ সাশ্রয় হবে এবং ভ্রমণের প্রতিটি অংশের উপর আপনার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকবে।

গবেষণা এবং তথ্য সংগ্রহ করুনঃ ভ্রমণ গন্তব্য সম্পর্কে অনলাইনে গবেষণা করুন। ব্লগ, ইউটিউব ভিডিও, এবং ট্রাভেল ওয়েবসাইট (যেমন TripAdvisor, Lonely Planet) থেকে তথ্য সংগ্রহ করুন।
সাশ্রয়ী ফ্লাইট খুঁজুনঃ সস্তা ফ্লাইট খুঁজতে Skyscanner, Google Flights, বা Kayak এর মতো ফ্লাইট সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করুন। আগাম টিকিট বুকিং করলে কম খরচে টিকিট পাওয়া যায়।
থাকার জায়গা নিজে ঠিক করুনঃ বাজেট হোটেল, হোস্টেল, এয়ারবিএনবি, বা গেস্টহাউস বুক করতে Booking.com, Agoda, বা Hostelworld ব্যবহার করুন। থাকার জন্য লোকেশনের গুরুত্ব বিবেচনা করুন যেন যাতায়াত সহজ হয়।
স্থানীয় পরিবহন ও খাবারের পরিকল্পনা করুনঃ গন্তব্যের স্থানীয় পরিবহন সম্পর্কে জানুন এবং পাবলিক ট্রান্সপোর্টের সময়সূচি ডাউনলোড করুন। খাবারের জন্য স্থানীয় স্ট্রিট ফুড এবং ছোট রেস্তোরাঁর তালিকা তৈরি করুন।
নিজের ভ্রমণসূচি তৈরি করুনঃ প্রতিদিন কোথায় কোথায় ঘুরবেন তার একটি তালিকা তৈরি করুন। গুগল ম্যাপ ব্যবহার করে দূরত্ব এবং যাতায়াতের সময় সম্পর্কে পরিকল্পনা করুন।
ডিসকাউন্ট পাস বা টিকিট কিনুনঃ পর্যটন আকর্ষণগুলোর জন্য ডিসকাউন্ট পাস (যেমন সিটি পাস) কিনলে খরচ কমবে। আগাম টিকিট কিনে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ানোর ঝামেলা এড়াতে পারেন।
ফ্রি অ্যাট্রাকশন এবং ইভেন্ট খুঁজুনঃ অনেক শহরে ফ্রি মিউজিয়াম, পার্ক এবং ঐতিহাসিক স্থান থাকে।অনলাইনে বা স্থানীয়দের থেকে ফ্রি ইভেন্ট বা ফেস্টিভ্যাল সম্পর্কে জানুন।
ফাইন্যান্স এবং বাজেট মনিটর করুনঃ ভ্রমণের জন্য একটি নির্দিষ্ট বাজেট ঠিক করুন এবং খরচের তালিকা রাখুন। বিদেশে ব্যবহারের জন্য এমন ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করুন যা লেনদেন ফি কম নেয়।

নিজেই ভ্রমণ পরিকল্পনা করলে আপনি সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে আপনার পছন্দ অনুযায়ী ভ্রমণ উপভোগ করতে পারবেন। এটি কেবল খরচ কমাবে না, বরং আপনাকে ভ্রমণের প্রতিটি ধাপে আরও অভিজ্ঞ এবং আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে।

ফ্রি অ্যাট্রাকশন ঘুরুন

বিদেশ ভ্রমণের খরচ কমানোর অন্যতম সেরা উপায় হলো গন্তব্যে থাকা ফ্রি অ্যাট্রাকশন বা বিনামূল্যে উপভোগযোগ্য স্থানগুলোতে ঘুরে বেড়ানো। এতে আপনার বাজেটের সাথে সাথে ভ্রমণের আনন্দও বহুগুণে বেড়ে যাবে।

পাবলিক পার্ক এবং উদ্যান ঘুরুনঃ বেশিরভাগ শহরে সুন্দর পাবলিক পার্ক ও উদ্যান থাকে, যেখানে প্রবেশের জন্য কোনো ফি লাগে না। উদাহরণ: নিউইয়র্কের সেন্ট্রাল পার্ক, লন্ডনের হাইড পার্ক, প্যারিসের জার্ডিন ডু লুক্সেমবার্গ।
ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শন করুনঃ অনেক শহরে ঐতিহাসিক স্থানগুলো ফ্রি এন্ট্রি দেয়। উদাহরণ: রোমের ট্রেভি ফাউন্টেন, অ্যাথেন্সের সিন্টাগমা স্কয়ার, দিল্লির ইন্ডিয়া গেট।
ফ্রি মিউজিয়াম ও গ্যালারি ভিজিট করুনঃ কিছু দেশ বা শহরে নির্দিষ্ট সময়ে মিউজিয়াম এবং আর্ট গ্যালারিতে ফ্রি প্রবেশের সুযোগ থাকে। উদাহরণ: লন্ডনের বেশিরভাগ মিউজিয়াম, যেমন ব্রিটিশ মিউজিয়াম এবং ন্যাশনাল গ্যালারি, ফ্রি।
ফ্রি ওয়াকিং ট্যুরে যোগ দিনঃ বড় শহরগুলোতে ফ্রি ওয়াকিং ট্যুর পরিচালিত হয়। এটি স্থানীয় সংস্কৃতি এবং ইতিহাস জানার একটি সাশ্রয়ী উপায়। যেমন: প্রাগ, বার্সেলোনা, এবং বুদাপেস্টে ফ্রি গাইডেড ট্যুর জনপ্রিয়।
ফ্রি ফেস্টিভ্যাল ও ইভেন্টে অংশগ্রহণ করুনঃ অনেক দেশে বিনামূল্যে কনসার্ট, স্ট্রিট ফেস্টিভ্যাল এবং কালচারাল ইভেন্ট আয়োজন করা হয়। উদাহরণ: স্কটল্যান্ডের এডিনবরার ফ্রিঞ্জ ফেস্টিভ্যাল, থাইল্যান্ডের লোই ক্রাথং ফেস্টিভ্যাল।
পাবলিক বিচ ভ্রমণ করুনঃ সমুদ্রতীরবর্তী দেশে ফ্রি পাবলিক বিচ ঘোরার সুযোগ নিন। উদাহরণ: বার্সেলোনার লা বার্সেলোনেটা বিচ, অস্ট্রেলিয়ার বন্ডাই বিচ।
বাজার ঘুরে দেখুনঃ স্থানীয় বাজারে ঘুরে বিভিন্ন পণ্য ও খাবার দেখার পাশাপাশি স্থানীয় সংস্কৃতি উপভোগ করুন। উদাহরণ: দুবাইয়ের গোল্ড সোক, ব্যাংককের চাতুচাক মার্কেট।
পাহাড় ও প্রকৃতি উপভোগ করুনঃ পাহাড়ি এলাকায় বিনামূল্যে হাইকিং এবং প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করুন। উদাহরণ: সুইজারল্যান্ডের আল্পস, নেপালের অন্নপূর্ণা হিমালয়।

ফ্রি অ্যাট্রাকশন ঘোরার মাধ্যমে আপনি আপনার ভ্রমণ বাজেট সাশ্রয় করতে পারবেন এবং ভ্রমণের অভিজ্ঞতা আরও সমৃদ্ধ করতে পারবেন। এটি ভ্রমণকে আরও উপভোগ্য এবং অর্থবহ করে তোলে।

ভিসার খরচ কমানোর উপায়

বিদেশ ভ্রমণে একটি বড় খরচের অংশ হলো ভিসার ফি। তবে কিছু সহজ কৌশল অনুসরণ করে ভিসার খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব।

ভিসা-ফ্রি বা অন-অ্যারাইভাল দেশ বেছে নিনঃ অনেক দেশের জন্য বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের ভিসা-ফ্রি বা অন-অ্যারাইভাল সুবিধা রয়েছে। উদাহরণ: মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান। এই দেশগুলোতে ভ্রমণের জন্য অতিরিক্ত ভিসার ফি দিতে হয় না।
ই-ভিসা পদ্ধতি ব্যবহার করুনঃ অনেক দেশ ই-ভিসা (অনলাইনে ভিসা আবেদন) প্রদান করে যা সাধারণত সস্তা এবং সহজ। উদাহরণ: দুবাই, তুরস্ক, এবং মালয়েশিয়ার জন্য ই-ভিসা সুবিধা রয়েছে।
গ্রুপ ভিসা আবেদন করুনঃ কিছু দেশে একাধিক ব্যক্তি একসাথে ভিসা আবেদন করলে খরচ কম হয়।উদাহরণ: চীন বা থাইল্যান্ডে গ্রুপ ভিসা আবেদন করলে খরচ কমে।
স্বল্পমেয়াদী ভিসা নিনঃ দীর্ঘমেয়াদী ভিসার তুলনায় স্বল্পমেয়াদী ভিসার ফি কম হয়। আপনার ভ্রমণের সময়কাল অনুযায়ী ভিসার ধরন বেছে নিন।
স্থানীয় ট্রাভেল এজেন্সির পরিবর্তে সরাসরি আবেদন করুনঃ অনেক ট্রাভেল এজেন্সি অতিরিক্ত চার্জ নিয়ে থাকে। তাই সরাসরি দূতাবাস বা অনলাইনে আবেদন করলে খরচ কমানো সম্ভব। ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানুন।
বিশেষ ভিসা ছাড়ের সুযোগ নিনঃ কিছু দেশ নির্দিষ্ট সময়ে ভিসা ফি কমিয়ে দেয় বা প্রমোশনাল অফার চালু করে। উদাহরণ: মালয়েশিয়া বা থাইল্যান্ডে কখনো কখনো ভিসা ফি মওকুফ করা হয়।
মাল্টি-ডেস্টিনেশন ভিসা নিনঃ একটি ভিসা ব্যবহার করে একাধিক দেশ ভ্রমণ করার সুযোগ খুঁজুন।উদাহরণ: শেঞ্জেন ভিসা ব্যবহার করে ইউরোপের ২৬টি দেশ ঘোরা সম্ভব।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ঠিকমতো প্রস্তুত করুনঃ ভিসা আবেদন ফর্ম ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সঠিকভাবে প্রস্তুত রাখুন। ভুল বা অসম্পূর্ণ কাগজপত্রের জন্য আবেদন প্রত্যাখ্যান হলে পুনরায় আবেদন করতে অতিরিক্ত খরচ হতে পারে।
বিশেষ পাসপোর্ট সুবিধা খুঁজুনঃ কিছু দেশের জন্য বিশেষ চুক্তির আওতায় ভিসা ছাড় দেওয়া হয়।উদাহরণ: সার্ক দেশগুলোর মধ্যে ভ্রমণে বিশেষ সুবিধা।

ভিসার খরচ কমাতে ভিসা-ফ্রি বা অন-অ্যারাইভাল দেশ বেছে নেওয়া, ই-ভিসা সুবিধা ব্যবহার করা এবং সরাসরি আবেদন করা কার্যকর পদ্ধতি। একটু পরিকল্পনা করে এবং সঠিক তথ্য জেনে আবেদন করলে আপনার ভ্রমণ আরও সাশ্রয়ী হবে।

ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্স বেছে নিন

বিদেশ ভ্রমণে ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্স নেওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যা আপনাকে unforeseen সমস্যার মোকাবিলায় সাহায্য করে। তবে, সাশ্রয়ী পথে ইন্স্যুরেন্স বেছে নেওয়া ভ্রমণের খরচ কমাতে সহায়ক হতে পারে।

প্রয়োজনীয় কভারেজ চিহ্নিত করুনঃ ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্সের পলিসি বেছে নেওয়ার আগে, আপনার ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় কভারেজ চিহ্নিত করুন। যেমন: মেডিক্যাল কভারেজ, ট্যুর ক্যানসেলেশন, লস্ট ব্যাগেজ, বা টার্মিনাল ডিলেস (বিমান চলাচল বিলম্ব)।
কোম্পানি বা পলিসির তুলনা করুনঃ বিভিন্ন ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি এবং তাদের পলিসির মধ্যে তুলনা করে সস্তা ও উপযুক্ত পলিসি বেছে নিন। অনলাইনে বিভিন্ন ইন্স্যুরেন্স প্ল্যাটফর্ম (যেমন Policybazaar, TravelInsurance.com) ব্যবহার করে তুলনা করতে পারেন।
শুধুমাত্র বিদেশে প্রয়োজনীয় কভারেজ নিনঃ যদি আপনার বিদেশে ভ্রমণের সময় শুধু চিকিৎসা বা জরুরি সহায়তার প্রয়োজন হয়, তবে শুধুমাত্র এই ধরনের কভারেজের জন্য পলিসি নিন। অনেক ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি স্বতন্ত্র কভারেজ অপশন অফার করে, যেমন মেডিক্যাল বা ট্রিপ ক্যানসেলেশন কভারেজ।
যাত্রার ধরন অনুযায়ী ইন্স্যুরেন্স বেছে নিনঃ যদি আপনি বাজেট ট্রাভেল করেন, তবে সস্তা ইন্স্যুরেন্স পলিসি চয়ন করুন। যদি আপনি অ্যাডভেঞ্চার ট্রাভেল করছেন (যেমন পর্বত আরোহণ, স্কুবা ডাইভিং), তাহলে অ্যাডভেঞ্চার ট্রাভেল কভারেজ নেওয়া উচিত।
পলিসির শর্তাবলী ভালোভাবে পড়ুনঃ ইন্স্যুরেন্স পলিসি কেনার আগে তার শর্তাবলী, কভারেজ সীমা, এবং এক্সক্লুশন ভালোভাবে পড়ে নিন। যদি কোনো অস্পষ্টতা থাকে, তাহলে ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করুন।
গ্রুপ বা পারিবারিক ইন্স্যুরেন্স পলিসি নিনঃ যদি আপনি পরিবারের সদস্যদের সাথে ভ্রমণ করছেন, তবে গ্রুপ বা পারিবারিক ইন্স্যুরেন্স পলিসি নেয়ার মাধ্যমে খরচ কমানো সম্ভব। এটি একক পলিসির তুলনায় সস্তা হতে পারে এবং একসাথে বেশ কয়েকজনের কভারেজ দেয়।
পূর্ববর্তী রোগের জন্য অতিরিক্ত কভারেজ নিনঃ যদি আপনার কোনো পূর্ববর্তী স্বাস্থ্য সমস্যা থাকে, তবে সেক্ষেত্রে অতিরিক্ত কভারেজ নেয়া গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত এই ধরনের কভারেজের জন্য কিছু অতিরিক্ত খরচ হতে পারে, তবে এটি আপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
অফার এবং ডিসকাউন্ট খুঁজুনঃ অনেক সময় ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি বিভিন্ন অফার এবং ডিসকাউন্ট দেয়। আপনি যদি অফ-পিক সিজনে ভ্রমণ করেন, তবে সেসময় ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্সে বড় ডিসকাউন্ট পাওয়া যেতে পারে।
মাল্টি-ট্রিপ পলিসি নিনঃ যদি আপনি একাধিক দেশ বা বিভিন্ন সময়ে ভ্রমণ করেন, তবে মাল্টি-ট্রিপ ইন্স্যুরেন্স পলিসি নেয়া উপযুক্ত হতে পারে। একাধিক ট্রিপের জন্য একবারের পলিসি কেনার মাধ্যমে খরচ কমানো সম্ভব।

ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্স সাশ্রয়ীভাবে বেছে নেয়ার জন্য আপনার ভ্রমণের প্রয়োজন অনুযায়ী পলিসি নির্বাচন করুন। তুলনা করুন, সঠিক কভারেজ বেছে নিন এবং শর্তাবলী পড়ে ভালোভাবে বুঝে নিন যাতে আপনার ভ্রমণ নিরাপদ ও সাশ্রয়ী হয়।

অতিরিক্ত খরচ এড়িয়ে চলুন

বিদেশে ভ্রমণকালে কিছু অতিরিক্ত খরচের কারণে বাজেট বাড়তে পারে। তবে কিছু কৌশল অবলম্বন করে এই অতিরিক্ত খরচ এড়ানো সম্ভব। এখানে কিছু সহজ উপায় দেওয়া হলো যা আপনার ভ্রমণকে সাশ্রয়ী রাখতে সাহায্য করবে:

অপ্রয়োজনীয় শপিং এড়িয়ে চলুনঃ বিদেশে ভ্রমণের সময় অনেকেই স্মারক বা গিফট কেনার জন্য অতিরিক্ত টাকা খরচ করেন। তবে, অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটা থেকে দূরে থাকুন এবং শুধুমাত্র দরকারি পণ্য কিনুন।
বিনামূল্যে বা সস্তায় খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুনঃ হোটেল বা রেস্তোরাঁয় খাবার খাওয়া সাধারণত বেশি খরচের কারণ হয়। পরিবর্তে স্থানীয় বাজার বা স্ট্রিট ফুডে খাবার খাওয়া সস্তা হতে পারে এবং স্থানীয় সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হওয়ার সুযোগ দেয়।
পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করুনঃ ট্যাক্সি বা রাইড শেয়ারিং সার্ভিসের তুলনায় পাবলিক ট্রান্সপোর্ট যেমন বাস, ট্রেন বা মেট্রো ব্যবহার করা অনেক সস্তা। অনেক শহরে ট্রান্সপোর্টের জন্য সাপ্তাহিক বা মাসিক পাসও পাওয়া যায়, যা একাধিক যাত্রার জন্য সাশ্রয়ী।
ভ্রমণ চলাকালে টিপস কম দিনঃ অনেক দেশে ভ্রমণকারী টিপস দেওয়া একটি সাধারণ প্রথা হলেও অতিরিক্ত টিপস দেয়া এড়িয়ে চলুন। টিপস দেওয়ার আগে স্থানীয় রীতিনীতি জানুন এবং সঠিক পরিমাণে টিপস দিন।
এয়ারলাইনসের অতিরিক্ত ফি এড়িয়ে চলুনঃ কিছু এয়ারলাইন অতিরিক্ত লাগেজ ফি বা সিট সিলেকশন ফি নিয়ে থাকে। আপনি যদি কম খরচে ভ্রমণ করতে চান, তবে অতিরিক্ত ফি এড়াতে চেষ্টা করুন। এর জন্য অতিরিক্ত লাগেজ না নিয়ে, সস্তা সিট বেছে নিন এবং মেল খাবার বা অন্যান্য পরিষেবাগুলির জন্য অতিরিক্ত অর্থ খরচ করবেন না।
বিনামূল্যে ট্যুর এবং আকর্ষণগুলি উপভোগ করুনঃ অনেক শহরে বিনামূল্যে গাইডেড ট্যুর এবং আকর্ষণ উপলব্ধ থাকে। আপনি যদি দর্শনীয় স্থান বা মিউজিয়ামে যেতে চান, তবে সেখানে প্রবেশের জন্য কিছু দিন বা সময় বিনামূল্যে প্রবেশের সুযোগ থাকতে পারে।
ট্রাভেল প্যাকেজের পরিবর্তে নিজেই পরিকল্পনা করুনঃ ট্রাভেল এজেন্সির প্যাকেজের মধ্যে অনেক সময় অতিরিক্ত খরচ থাকে। আপনি যদি নিজের ভ্রমণ পরিকল্পনা করেন, তবে খরচ অনেক কমানো সম্ভব। নির্দিষ্ট গন্তব্য, হোটেল, ট্রান্সপোর্ট এবং দর্শনীয় স্থানগুলো খুঁজে বের করে নিজেই পরিকল্পনা করুন।
ভ্রমণ সময় কমানোর চেষ্টা করুনঃ দীর্ঘস্থায়ী ভ্রমণ বা একাধিক ট্রানজিট অনেক সময় অতিরিক্ত খরচের কারণ হয়। আপনার গন্তব্যে সরাসরি ফ্লাইট বা কম ট্রানজিটের মাধ্যমে যাত্রা করুন যাতে খরচ কম হয়।
বিশেষ অফার ও ডিসকাউন্ট ব্যবহার করুনঃ অনেক এয়ারলাইন, হোটেল বা ট্যুর অপারেটর বিশেষ অফার ও ডিসকাউন্ট দেয়। এই অফারগুলির মাধ্যমে আপনি আপনার ভ্রমণের খরচ কমাতে পারেন।আপনি যদি ভ্রমণ পরিকল্পনা আগে থেকেই করেন, তবে এই অফারগুলো কাজে লাগান।
প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো আগে থেকেই সংগ্রহ করুনঃ যেসব জিনিস ভ্রমণের সময় প্রয়োজন, সেগুলো আগে থেকেই কিনে রাখুন যেমন সানস্ক্রিন, গন্তব্যস্থল অনুযায়ী পোশাক, মেডিকেশন ইত্যাদি।এতে আপনার ভ্রমণের সময় অতিরিক্ত খরচ এড়ানো যাবে।

অতিরিক্ত খরচ এড়ানোর জন্য কিছু সতর্কতা এবং পরিকল্পনার প্রয়োজন। সঠিকভাবে বাজেট তৈরি করে, সাশ্রয়ী পরিবহন ও খাবার বেছে নিয়ে, এবং অপ্রয়োজনীয় খরচ কমিয়ে আপনি আপনার বিদেশ ভ্রমণকে আরও সাশ্রয়ী ও আনন্দদায়ক করতে পারেন।

শেষকথাঃ উপসংহার

বিদেশ ভ্রমণ করতে চাইলে সঠিক পরিকল্পনা এবং খরচের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সস্তায় বিদেশ ভ্রমণের জন্য, আপনি বেশ কিছু কৌশল অবলম্বন করতে পারেন—যেমন সস্তা এয়ারলাইনস ব্যবহার, বাজেট হোটেল নির্বাচন, স্থানীয় খাবার খাওয়া, পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার, এবং ট্যুর এজেন্টের পরিবর্তে নিজেই পরিকল্পনা করা। এছাড়াও, ভিসার খরচ কমানোর উপায় খুঁজে বের করা, বিনামূল্যে অ্যাট্রাকশনগুলি ঘুরে দেখা, এবং ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্সের সাশ্রয়ী অপশন বেছে নেয়া ভ্রমণের খরচ কমাতে সাহায্য করবে।

অতিরিক্ত খরচ থেকে বাঁচতে অপ্রয়োজনীয় শপিং ও টিপস কম দেওয়ার পাশাপাশি, বিশেষ অফার ও ডিসকাউন্ট ব্যবহার করলে আপনি আরও সাশ্রয়ীভাবে বিদেশ ভ্রমণ উপভোগ করতে পারবেন। সঠিক সময়ে ভ্রমণ করা এবং পরিকল্পনা আগে থেকেই করা আপনার বিদেশ যাত্রাকে আরও স্মরণীয় এবং সাশ্রয়ী করে তুলবে।