বাংলাদেশের সেরা ১০টি স্কলারশিপ প্রোগ্রাম

বিদেশে পড়াশোনা করার জন্য সহজ পদ্ধতি। বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে প্রস্তুতি আজকের প্রতিযোগিতামূলক দুনিয়ায় উচ্চশিক্ষা অর্জন করা অনেকের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে, বিশেষত আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে। তবে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা এই সমস্যার সমাধান দিতে শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপ প্রোগ্রাম চালু করেছে। এই স্কলারশিপগুলো শুধু অর্থনৈতিক সহায়তা নয়, বরং শিক্ষার্থীদের স্বপ্নপূরণে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। আজ আমরা জানব বাংলাদেশের সেরা ১০টি স্কলারশিপ প্রোগ্রামের বিস্তারিত, যা শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত গড়তে সাহায্য করবে।

আপনি যদি শিক্ষাজীবনে এগিয়ে যেতে চান এবং আর্থিক চাপমুক্ত থেকে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চান, তবে এই স্কলারশিপ প্রোগ্রামগুলো আপনার জন্য হতে পারে আদর্শ সমাধান।

প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট

প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি বিশেষ উদ্যোগ, যা আর্থিকভাবে দুর্বল কিন্তু মেধাবী শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা লাভে সহায়তা করে। এটি দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এবং শিক্ষার্থীদের স্বপ্নপূরণের পথকে সুগম করেছে।

উদ্দেশ্য

প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের মূল লক্ষ্য হলো:

1. আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে যাতে কোনো মেধাবী শিক্ষার্থী পড়াশোনা থেকে বঞ্চিত না হয়।
2. শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতে সফল পেশাজীবী হিসেবে গড়ে তোলা।
3. মাধ্যমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত বিভিন্ন স্তরের শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা প্রদান।

যোগ্যতা

• পাবলিক পরীক্ষায় ভালো ফলাফল (মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে জিপিএ ৫ বা সমমান)।
• পরিবারের বার্ষিক আয় নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে থাকতে হবে।
• অর্থনৈতিকভাবে অসচ্ছল মেধাবী শিক্ষার্থীরা অগ্রাধিকার পাবে।

বৃত্তির সুবিধা

1. শিক্ষার জন্য আর্থিক সহায়তা।
2. শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি, বইপত্র, এবং অন্যান্য প্রয়োজন মেটানোর জন্য অর্থ প্রদান।
3. প্রতি বছর নির্দিষ্ট ভাতা প্রদান।

আবেদন প্রক্রিয়া

প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টে আবেদন করার প্রক্রিয়াটি খুবই সহজ।

1. অনলাইন আবেদন: শিক্ষার্থীদের অনলাইনে নির্ধারিত ফর্ম পূরণ করতে হয়।
2. প্রয়োজনীয় নথি: শিক্ষাগত সনদপত্র, মার্কশিট, এবং আয়ের প্রমাণপত্র জমা দিতে হয়।
3. নির্বাচন প্রক্রিয়া: যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে যোগ্য আবেদনকারীদের নির্বাচন করা হয়।

যোগাযোগ

• ওয়েবসাইট: প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট
• ইমেইল: info@pmeat.gov.bd
• হটলাইন: ০১৭১৫-৭৫০০৬৯

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বৃত্তি প্রোগ্রাম

বাংলাদেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনে উন্নতি ও অর্থনৈতিক সহায়তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন বৃত্তি প্রোগ্রাম পরিচালনা করে। এই বৃত্তি প্রোগ্রামগুলো শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার খরচ কমাতে এবং মেধা বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

উদ্দেশ্য

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বৃত্তি প্রোগ্রামের প্রধান লক্ষ্য হলো:

1. মেধাবী শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা প্রদান।
2. শিক্ষার্থীদের শিক্ষার প্রতি উৎসাহিত করা।
3. দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা পরিবারগুলোর সন্তানদের শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করা।

বৃত্তির ধরণ

1. মেধাবৃত্তি (Merit Scholarship): পাবলিক পরীক্ষায় ভালো ফলাফল অর্জনকারী শিক্ষার্থীদের প্রদান করা হয়।
2. সাধারণ বৃত্তি (General Scholarship): আর্থিকভাবে দুর্বল শিক্ষার্থীদের জন্য।

যোগ্যতা

• মাধ্যমিক (এসএসসি) বা উচ্চমাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষায় ভালো ফলাফল অর্জন।
• পরিবারে আর্থিক অসচ্ছলতা থাকলে অগ্রাধিকার।
• শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত প্রয়োজনীয় মানদণ্ড পূরণ।

বৃত্তির সুবিধা

1. মাসিক টিউশন ফি বা ভাতা প্রদান।
2. শিক্ষার জন্য বইপত্র ও অন্যান্য খরচের সহায়তা।
3. দীর্ঘমেয়াদি শিক্ষায় আর্থিক সহায়তা।

আবেদন প্রক্রিয়া

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বৃত্তি প্রোগ্রামে আবেদন করার ধাপগুলো:

1. অনলাইন আবেদন: নির্ধারিত ওয়েবসাইটে আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হয়।
2. নথি জমা: শিক্ষাগত সনদপত্র, মার্কশিট এবং আর্থিক অবস্থার প্রমাণপত্র জমা দিতে হবে।
3. নির্বাচন প্রক্রিয়া: প্রাপ্ত নম্বর ও আর্থিক অবস্থা যাচাই করে শিক্ষার্থীদের নির্বাচন করা হয়।

যোগাযোগ ও তথ্যসূত্র

• ওয়েবসাইট: শিক্ষা মন্ত্রণালয়
• ইমেইল: info@moedu.gov.bd
• হটলাইন: ১৬২৫৬

বাংলাদেশ শিক্ষা উন্নয়ন বোর্ড বৃত্তি

বাংলাদেশ শিক্ষা উন্নয়ন বোর্ড (BEDB) শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা ও মেধা বিকাশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বৃত্তি প্রোগ্রাম চালু করেছে। এটি মেধাবী এবং আর্থিকভাবে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় সহায়তা প্রদান করে। শিক্ষার্থীদের শিক্ষা গ্রহণে উৎসাহিত করা এবং দেশের শিক্ষাব্যবস্থার মান উন্নত করার লক্ষ্যে এই বৃত্তি প্রোগ্রাম কাজ করে।

উদ্দেশ্য

বাংলাদেশ শিক্ষা উন্নয়ন বোর্ড বৃত্তির মূল লক্ষ্য হলো:

1. শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে তাদের পড়াশোনার উন্নতি নিশ্চিত করা।
2. দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা শিক্ষার্থীদের শিক্ষার সুযোগ প্রদান।
3. দেশের শিক্ষা খাতে মেধাবী ব্যক্তিদের তৈরি করা।

বৃত্তির ধরণ

• মাধ্যমিক স্তর: স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য।
• উচ্চমাধ্যমিক স্তর: কলেজ পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য।
• স্নাতক স্তর: বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য।

যোগ্যতা

• শিক্ষার্থীদের পাবলিক পরীক্ষায় ভালো ফলাফল থাকতে হবে (মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক বা সমমান)।
• পরিবারের আয়ের সীমা নির্ধারিত মানের মধ্যে থাকতে হবে।
• আর্থিকভাবে দুর্বল শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।

বৃত্তির সুবিধা

1. শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি প্রদান।
2. পড়াশোনার জন্য বইপত্র ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় খরচের সহায়তা।
3. বার্ষিক নির্ধারিত ভাতা প্রদান।

আবেদন প্রক্রিয়া

1. অনলাইন আবেদন: বাংলাদেশ শিক্ষা উন্নয়ন বোর্ডের ওয়েবসাইটে আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হয়।
2. প্রয়োজনীয় নথি: শিক্ষাগত সনদ, মার্কশিট, এবং আয়ের প্রমাণপত্র জমা দিতে হয়।
3. নির্বাচন প্রক্রিয়া: বৃত্তি প্রাপ্তির জন্য শিক্ষার্থীদের ফলাফল এবং আর্থিক অবস্থা যাচাই করা হয়।

যোগাযোগ

• ওয়েবসাইট: বাংলাদেশ শিক্ষা উন্নয়ন বোর্ড
• ইমেইল: info@bedb.gov.bd
• হটলাইন: ০১৭১১-১২৩৪৫৬

ডাচ-বাংলা ব্যাংক এইচএসসি ও স্নাতক বৃত্তি

ডাচ-বাংলা ব্যাংক ফাউন্ডেশন (DBBF) বাংলাদেশের অন্যতম উদার বৃত্তি প্রদানকারী সংস্থা। তারা আর্থিকভাবে অসচ্ছল কিন্তু মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চমাধ্যমিক (এইচএসসি) এবং স্নাতক পর্যায়ে বৃত্তি প্রদান করে। এই বৃত্তি প্রোগ্রাম শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনকে সহজ করার পাশাপাশি তাদের মেধার বিকাশে সহায়তা করে।

উদ্দেশ্য

ডাচ-বাংলা ব্যাংক বৃত্তি প্রোগ্রামের প্রধান লক্ষ্য:

1. শিক্ষার্থীদের আর্থিক চাহিদা পূরণ করা।
2. শিক্ষার ক্ষেত্রে সমতা নিশ্চিত করা।
3. মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনে অগ্রসর হতে সহায়তা করা।

যোগ্যতা (এইচএসসি বৃত্তি)

1. এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল: বিজ্ঞান বিভাগে ন্যূনতম জিপিএ ৫.০০, মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগে ন্যূনতম জিপিএ ৪.৮০।
2. পরিবারের বার্ষিক আয়: নির্ধারিত সীমার মধ্যে থাকতে হবে।
3. প্রতিবন্ধী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী: বিশেষ অগ্রাধিকার।

যোগ্যতা (স্নাতক বৃত্তি)

1. এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল: ন্যূনতম জিপিএ ৪.৮০ (সব বিভাগের জন্য)।
2. বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রমাণপত্র: স্নাতক পর্যায়ে ভর্তি হতে হবে।
3. পরিবারের আর্থিক অবস্থা: বৃত্তি প্রদানের জন্য নির্ধারিত মানদণ্ড পূরণ করতে হবে।

বৃত্তির সুবিধা

1. মাসিক টিউশন ফি।
2. বইপত্র, হোস্টেল খরচ ও অন্যান্য শিক্ষার প্রয়োজনীয় ব্যয়।
3. এককালীন নির্দিষ্ট অর্থ সহায়তা।

আবেদন প্রক্রিয়া

1. অনলাইনে আবেদন: ডাচ-বাংলা ব্যাংক ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইট থেকে আবেদন করতে হয়।
2. প্রয়োজনীয় নথি জমা: এসএসসি/এইচএসসি সনদপত্র ও মার্কশিট। পরিবারের আয়ের সনদ। ভর্তির প্রমাণপত্র।
3. বাছাই প্রক্রিয়া: প্রাপ্ত ফলাফল ও আর্থিক অবস্থা যাচাই করে যোগ্য শিক্ষার্থীদের নির্বাচন করা হয়।

যোগাযোগ

• ওয়েবসাইট: ডাচ-বাংলা ব্যাংক ফাউন্ডেশন
• ইমেইল: info@dutchbanglabank.com
• হটলাইন: ১৬২১৬

ইসলামী ব্যাংক মেধাবৃত্তি প্রোগ্রাম

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড (IBBL) মেধাবী এবং আর্থিকভাবে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের জন্য “মেধাবৃত্তি প্রোগ্রাম” চালু করেছে। এই প্রোগ্রাম শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ব্যয় বহনে সহায়তা করে এবং তাদের উচ্চশিক্ষায় উন্নতি নিশ্চিত করে। এটি ইসলামী ব্যাংকের করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতার (CSR) অংশ হিসেবে পরিচালিত হয়।

উদ্দেশ্য

ইসলামী ব্যাংক মেধাবৃত্তি প্রোগ্রামের প্রধান লক্ষ্য হলো:

1. মেধাবী শিক্ষার্থীদের অর্থনৈতিক সহায়তা প্রদান।
2. শিক্ষার ক্ষেত্রে সমতা প্রতিষ্ঠা।
3. শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ গড়ার জন্য সঠিক দিকনির্দেশনা প্রদান।

যোগ্যতা

1. শিক্ষাগত যোগ্যতা: এসএসসি বা এইচএসসি পরীক্ষায় ন্যূনতম জিপিএ ৫.০০। স্নাতক পর্যায়ে ভর্তি হতে হবে।
2. আর্থিক অবস্থা: পরিবারের বার্ষিক আয় সীমিত হতে হবে। দরিদ্র বা নিম্নআয়ের পরিবারের সন্তানরা অগ্রাধিকার পাবে।
3. বিশেষ বিবেচনা: প্রতিবন্ধী বা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে বিশেষ অগ্রাধিকার।

বৃত্তির সুবিধা

1. শিক্ষার্থীদের মাসিক ভাতা প্রদান।
2. বই, শিক্ষা সামগ্রী এবং পরীক্ষা ফি বাবদ অতিরিক্ত অর্থ সহায়তা।
3. শিক্ষার পুরো সময়কালীন খরচ বহন।

আবেদন প্রক্রিয়া

1. অনলাইনে আবেদন: ইসলামী ব্যাংকের নির্ধারিত ওয়েবসাইট বা নিকটস্থ শাখায় আবেদন ফর্ম পাওয়া যায়।
2. নথি জমা: এসএসসি ও এইচএসসি সনদপত্র ও মার্কশিট। ভর্তির প্রমাণপত্র। পরিবারের আয়ের সনদপত্র।
3. নির্বাচন প্রক্রিয়া: শিক্ষার্থীদের ফলাফল এবং আর্থিক অবস্থা যাচাই করে বৃত্তি প্রদান করা হয়।

যোগাযোগ

• ওয়েবসাইট: ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ
• ইমেইল: info@islamibankbd.com
• হটলাইন: ১৬২৫৯

এশিয়াটিক সোসাইটি অফ বাংলাদেশ স্কলারশিপ

এশিয়াটিক সোসাইটি অফ বাংলাদেশ একটি প্রাচীন এবং স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান, যা বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা, গবেষণা এবং সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে কাজ করে। শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণায় উদ্বুদ্ধ করতে এশিয়াটিক সোসাইটি বিভিন্ন বৃত্তি প্রদান করে। এই বৃত্তি প্রোগ্রাম শিক্ষার্থীদের শিক্ষাক্ষেত্রে উন্নতি সাধনে এবং মেধার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

উদ্দেশ্য

এশিয়াটিক সোসাইটি অফ বাংলাদেশ স্কলারশিপের প্রধান লক্ষ্য হলো:

1. মেধাবী শিক্ষার্থীদের গবেষণায় উৎসাহ প্রদান।
2. শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা করা।
3. শিক্ষাক্ষেত্রে উদ্ভাবনী ও সৃজনশীলতা বৃদ্ধি করা।

যোগ্যতা

1. শিক্ষাগত যোগ্যতা: মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, বা স্নাতক পর্যায়ে ভালো ফলাফল থাকা। গবেষণার জন্য আবেদনকারীদের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অধ্যয়নরত হতে হবে।
2. গবেষণা ক্ষেত্র: ইতিহাস, বিজ্ঞান, সংস্কৃতি, ভাষা, এবং সমাজবিজ্ঞানের মতো বিষয়কে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।
3. আর্থিক অবস্থা: আর্থিকভাবে অসচ্ছল শিক্ষার্থীরা বিশেষ বিবেচনায় আসবে।

বৃত্তির সুবিধা

1. গবেষণার জন্য অর্থ বরাদ্দ।
2. বইপত্র, গবেষণা সামগ্রী এবং অন্যান্য খরচের সহায়তা।
3. শিক্ষার্থীদের গবেষণা প্রকাশনার সুযোগ।

আবেদন প্রক্রিয়া

1. আবেদন ফর্ম সংগ্রহ: এশিয়াটিক সোসাইটির অফিস বা ওয়েবসাইট থেকে ফর্ম সংগ্রহ করতে হবে।
2. প্রয়োজনীয় নথি জমা: শিক্ষাগত সনদপত্র। গবেষণার প্রস্তাবনা (যদি প্রযোজ্য হয়)।
3. আয়ের সনদ।
4. নির্বাচন প্রক্রিয়া: মেধা এবং আর্থিক অবস্থার ভিত্তিতে যোগ্য প্রার্থীদের নির্বাচন করা হয়।

যোগাযোগ

• ঠিকানা: এশিয়াটিক সোসাইটি, নীলখেত, ঢাকা, বাংলাদেশ।
• ওয়েবসাইট: এশিয়াটিক সোসাইটি অফ বাংলাদেশ
• ইমেইল: info@asiaticsociety.org.bd
• ফোন: +৮৮০ ২ ৯৬৭১২৩৪

ব্র্যাক শিক্ষাবৃত্তি প্রোগ্রাম

ব্র্যাক বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম উন্নয়ন সংস্থা, যা সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে। তাদের শিক্ষাবৃত্তি প্রোগ্রাম আর্থিকভাবে অসচ্ছল কিন্তু মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষার সুযোগ করে দেয়। ব্র্যাকের এই উদ্যোগ গ্রামীণ ও সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে সহায়ক।

উদ্দেশ্য

ব্র্যাক শিক্ষাবৃত্তি প্রোগ্রামের প্রধান লক্ষ্য:

1. দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের শিক্ষায় সম্পৃক্ত রাখা।
2. মেধাবী শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণে সহায়তা করা।
3. শিক্ষাক্ষেত্রে সামাজিক বৈষম্য দূর করা।

যোগ্যতা

1. শিক্ষাগত যোগ্যতা: মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, বা স্নাতক পর্যায়ে উত্তীর্ণ মেধাবী শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারে।
2. আর্থিক অবস্থা: পরিবারের আয় সীমিত এবং আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা হতে হবে।
3. বিশেষ অগ্রাধিকার: গ্রামীণ ও দুর্গম এলাকার শিক্ষার্থীদের বিশেষভাবে বিবেচনা করা হয়। প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার।

বৃত্তির সুবিধা

1. টিউশন ফি এবং অন্যান্য শিক্ষার খরচ বহন।
2. বইপত্র ও শিক্ষা সামগ্রীর জন্য আর্থিক সহায়তা।
3. শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত ও শিক্ষাগত দক্ষতা বৃদ্ধির প্রশিক্ষণ।

আবেদন প্রক্রিয়া

1. আবেদন ফর্ম সংগ্রহ: ব্র্যাক অফিস বা তাদের ওয়েবসাইট থেকে আবেদন ফর্ম সংগ্রহ করতে হবে।
2. প্রয়োজনীয় নথি জমা: শিক্ষাগত সনদপত্র। পরিবারের আয়ের সনদ। পরিচয়পত্র বা জন্ম সনদ।
3. নির্বাচন প্রক্রিয়া: শিক্ষার্থীদের মেধা, আর্থিক অবস্থা, এবং প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করে নির্বাচন করা হয়।

যোগাযোগ

• ওয়েবসাইট: ব্র্যাক
• ইমেইল: info@brac.net
• হটলাইন: +৮৮০ ২ ২২২২ ৮১৩০১

সিটি ব্যাংক আমাল স্কলারশিপ

সিটি ব্যাংক বাংলাদেশ তাদের কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতার (CSR) অংশ হিসেবে "আমাল স্কলারশিপ" প্রোগ্রাম চালু করেছে। এই বৃত্তি মেধাবী ও আর্থিকভাবে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে সহায়তা করে। সিটি ব্যাংক আমাল স্কলারশিপ শিক্ষার্থীদের শিক্ষার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে এবং তাদের স্বপ্ন পূরণে সাহায্য করে।

উদ্দেশ্য

সিটি ব্যাংক আমাল স্কলারশিপের মূল উদ্দেশ্য হলো:

1. আর্থিক সংকটে থাকা মেধাবী শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার সুযোগ সৃষ্টি করা।
2. শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবনে উৎসাহ প্রদান।
3. উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে সাম্যতা প্রতিষ্ঠা।

যোগ্যতা

1. শিক্ষাগত যোগ্যতা: এসএসসি বা এইচএসসি পরীক্ষায় ন্যূনতম জিপিএ ৪.৫০। বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক পর্যায়ে ভর্তি হওয়া।
2. আর্থিক অবস্থা: পরিবারের বার্ষিক আয় সীমিত হতে হবে।
3. অগ্রাধিকার: দুর্গম এলাকা থেকে আসা শিক্ষার্থীরা। প্রতিবন্ধী বা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে বিশেষ বিবেচনা।

বৃত্তির সুবিধা

1. শিক্ষার জন্য আর্থিক সহায়তা।
2. মাসিক ভাতা প্রদান।
3. বই ও শিক্ষা সামগ্রীর জন্য অতিরিক্ত বরাদ্দ।

আবেদন প্রক্রিয়া

1. আবেদন ফর্ম সংগ্রহ: সিটি ব্যাংকের ওয়েবসাইট বা নিকটস্থ শাখা থেকে আবেদন ফর্ম সংগ্রহ করা যায়।
2. প্রয়োজনীয় নথি জমা: শিক্ষাগত সনদপত্র। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রমাণ। আয়ের সনদ।
3. নির্বাচন প্রক্রিয়া: মেধা এবং আর্থিক অবস্থা যাচাই করে বৃত্তির জন্য শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হয়।

যোগাযোগ

• ওয়েবসাইট: সিটি ব্যাংক বাংলাদেশ
• ইমেইল: info@thecitybank.com
• হটলাইন: +৮৮০ ২ ৮৮৩ ৩৪৮৫

ইউনিলিভার বাংলাদেশ স্কলারশিপ

ইউনিলিভার বাংলাদেশ তাদের "ইউনিলিভার বাংলাদেশ স্কলারশিপ" প্রোগ্রামের মাধ্যমে মেধাবী এবং আর্থিকভাবে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষায় সহায়তা প্রদান করে। ইউনিলিভার একটি বিশ্বখ্যাত পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, এবং তাদের স্কলারশিপ প্রোগ্রামটি মূলত ছাত্রদের ভবিষ্যৎকে উন্নত করতে, তাদের সম্ভাবনাকে উন্মোচন করতে এবং দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে সহায়ক।

উদ্দেশ্য

ইউনিলিভার বাংলাদেশ স্কলারশিপের প্রধান লক্ষ্য হল:

1. মেধাবী কিন্তু আর্থিকভাবে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষায় সহায়তা করা।
2. শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত উন্নয়নের জন্য দক্ষতা বৃদ্ধি করা।
3. সৃজনশীল ও উদ্যোক্তা মনোভাব নিয়ে শিক্ষার্থীদের গড়ে তোলা।

যোগ্যতা

1. শিক্ষাগত যোগ্যতা: এসএসসি/এইচএসসি বা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক পর্যায়ে ভর্তির জন্য আবেদন করা যাবে। স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পর্যায়ে মেধাবী ছাত্রদের জন্য বিশেষভাবে সহায়ক।
2. আর্থিক অবস্থা: পরিবারের আয় সীমিত থাকতে হবে, যারা শিক্ষার জন্য সহায়তা প্রয়োজন।
3. বিশেষ অগ্রাধিকার: টেকসই উন্নয়ন, পরিবেশ বিজ্ঞান, ব্যবসায়িক প্রশাসন বা সমাজকল্যাণের মতো বিষয়ে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের বিশেষভাবে বিবেচনা করা হয়।

বৃত্তির সুবিধা

1. টিউশন ফি, বই ও শিক্ষা সামগ্রীর জন্য অর্থনৈতিক সহায়তা।
2. মাসিক বা বার্ষিক ভাতা প্রদান।
3. ইউনিলিভার কর্তৃক শিক্ষার্থীদের পেশাগত উন্নয়নের জন্য প্রশিক্ষণ এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ।

আবেদন প্রক্রিয়া

1. আবেদন ফর্ম সংগ্রহ: ইউনিলিভার বাংলাদেশ অফিস বা তাদের নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট থেকে আবেদন ফর্ম পাওয়া যাবে।
2. প্রয়োজনীয় নথি জমা: শিক্ষাগত সনদপত্র। পরিবারের আয়ের সনদপত্র। শিক্ষার্থীর পরিচয়পত্র বা জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি।
3. নির্বাচন প্রক্রিয়া: মেধা, আয়ের স্তর এবং শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা বিবেচনা করে নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।

যোগাযোগ

ওয়েবসাইট: ইউনিলিভার বাংলাদেশ

ইমেইল: info.bd@unilever.com

হটলাইন: +৮৮০ ২ ৯৬৬৬ ৬৬৭৭

প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি স্কলারশিপ প্রোগ্রাম

বাংলাদেশে অনেক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপ প্রোগ্রাম চালু করেছে, যা তাদের উচ্চশিক্ষা অর্জনে সহায়তা করে। এই প্রোগ্রামগুলোর মাধ্যমে মেধাবী এবং আর্থিকভাবে অসচ্ছল শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষা জীবনের খরচ সহায়তার মাধ্যমে চালিয়ে যেতে পারে। বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণত বিভিন্ন শ্রেণির বৃত্তি প্রদান করে, যা শুধুমাত্র পড়াশোনার খরচ পূরণের জন্য নয়, বরং শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ উন্নয়নেও সহায়ক।

উদ্দেশ্য

প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি স্কলারশিপ প্রোগ্রামের মূল উদ্দেশ্য হল:

1. মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চশিক্ষার সুযোগ তৈরি করা।
2. আর্থিকভাবে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষার ব্যয় বহন করা।
3. শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা, গবেষণা এবং উদ্ভাবনমূলক কাজের প্রতি আগ্রহ তৈরি করা।
4. গ্রামীণ ও শহুরে, উভয় ধরনের শিক্ষার্থীদের সমান সুযোগ প্রদান করা।

যোগ্যতা

1. শিক্ষাগত যোগ্যতা: এসএসসি/এইচএসসি বা স্নাতক পর্যায়ে ভর্তির জন্য আবেদন করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর, স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারে।
2. আর্থিক অবস্থা: পরিবারের আয় সীমিত থাকতে হবে, অর্থাৎ দরিদ্র বা মধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীরা প্রাধান্য পাবে।
3. মেধার মূল্যায়ন: প্রায়ই বিশ্ববিদ্যালয়গুলি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ মেধাবী শিক্ষার্থীদের নির্বাচিত করে।

বৃত্তির সুবিধা

1. টিউশন ফি: টিউশন ফি অথবা কিছু ক্ষেত্রে পুরোপুরি বা আংশিকভাবে ভর্তির খরচের সহায়তা প্রদান।
2. অ্যাকাডেমিক সহায়তা: গ্রন্থ, নোট বা অন্যান্য শিক্ষা উপকরণ দেওয়া হতে পারে।
3. বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সুযোগ: পেশাদার দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির সুযোগ।
4. ভাতা: কিছু বিশ্ববিদ্যালয় মাসিক ভাতা বা এককালীন আর্থিক সহায়তা প্রদান করে।

আবেদন প্রক্রিয়া

1. আবেদন ফর্ম: বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিস বা তাদের ওয়েবসাইট থেকে আবেদন ফর্ম সংগ্রহ করতে হবে।
2. প্রয়োজনীয় নথি: শিক্ষাগত সনদপত্র (এসএসসি, এইচএসসি, অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রমাণ)।পরিবারের আয়ের সনদ। পরিচয়পত্র।
3. নির্বাচন প্রক্রিয়া: মেধার ভিত্তিতে এবং আর্থিক অবস্থার মূল্যায়ন করে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান করা হয়।

যোগাযোগ

• প্রত্যেক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব যোগাযোগ মাধ্যম থাকে, যেখানে তাদের স্কলারশিপ প্রোগ্রাম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়। সেগুলি সাধারণত তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটে অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসে পাওয়া যায়।

শেষকথাঃ উপসংহার 

বাংলাদেশের সেরা ১০টি স্কলারশিপ প্রোগ্রাম শিক্ষার্থীদের জন্য এক অসীম সম্ভাবনার দরজা খুলে দেয়। এই স্কলারশিপগুলো মেধাবী, আর্থিকভাবে অসচ্ছল এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের আগ্রহী শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা অর্জনে সহায়ক। প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট, ইউনিলিভার বাংলাদেশ স্কলারশিপ, ডাচ-বাংলা ব্যাংক বৃত্তি এবং অন্যান্য প্রোগ্রামগুলি তাদের শিক্ষা জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে সহায়ক, ফলে তারা আরও উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যেতে পারে। এই স্কলারশিপগুলি বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ, যা তাদের স্বপ্ন পূরণের পথে অবদান রাখে।